জুবায়ের খান প্রিন্স, পাবনা:
“অসচেতন, নিরক্ষর ও দিনমজুর শ্রেণির ব্যস্ত মানুষের দোরগোড়ায় সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব”—এভাবেই প্রশাসনিক দায়িত্ববোধের কথা তুলে ধরেছেন পাবনা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ নাহারুল ইসলাম।
দাপ্তরিক সীমারেখা পেরিয়ে সাধারণ মানুষের কাছাকাছি পৌঁছাতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন এই কর্মকর্তা। তিনি প্রতি শুক্রবার বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন এবং মুসল্লি ও ইমামের অনুমতিক্রমে নামাজ শেষে সমাজসচেতনমূলক বক্তব্য প্রদান করেন। এতে তিনি সরাসরি মানুষের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান, শুনেন তাদের সমস্যা ও অভাব-অভিযোগ, এবং আইনানুগ উপায়ে তা সমাধানের চেষ্টা করেন।
গত ২ মে (শুক্রবার) তিনি জুমার নামাজ আদায় করেন পাবনা সদর উপজেলার দুবলিয়া বাজার সংলগ্ন স্কুল ও কলেজের পাশে অবস্থিত কেন্দ্রীয় মসজিদে। নামাজ শেষে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি সমাজের বিভিন্ন সমস্যা ও তার প্রতিকার সম্পর্কে কথা বলেন। এ সময় মসজিদের জন্য সরকারি প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দকৃত ১ লাখ ১৫ হাজার টাকার অনুদানের বাস্তব অগ্রগতিও খতিয়ে দেখেন তিনি।
এক প্রশ্নের উত্তরে ইউএনও নাহারুল ইসলাম বলেন, “একসময় এলাকার মুরুব্বিরা গ্রাম্য শালিশের মাধ্যমে সমাজের অসঙ্গতি নিরসনে ভূমিকা রাখতেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বার্থ ও ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সেই সংস্কৃতি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এখন অনেক সাধারণ মানুষই উপজেলা পর্যায়ে আসতে চান না, কিংবা জানেন না কোথায় কিভাবে অভিযোগ জানাতে হবে।”
শুধু মসজিদভিত্তিক জনসংযোগেই নয়, ইউএনও’র এই তৎপরতা বিস্তৃত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাজার পর্যায়ে। কখনো আচমকা পরিদর্শনে গিয়ে নিজের অধীনস্থ দপ্তর ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম সরেজমিনে পরখ করছেন, নিচ্ছেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
বাল্যবিবাহ, নারী ও শিশু নির্যাতন, মাদকদ্রব্য সেবন ও বাণিজ্য, অশ্লীলতা ও অন্যান্য সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি করতেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন তিনি। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করছেন এবং সামাজিক ঐক্য ও নৈতিকতার ভিত্তিতে সুশাসনের আহ্বান জানাচ্ছেন।
Leave a Reply