মনসুর আলম(স্টাফ রিপোর্টার) :
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), চলনবিল রক্ষায় আমরা এবং চিকনাই নদী রক্ষায় আমরা এর যৌথ আয়োজনা নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২৫ পালিত হয়েছে। ২৭ জুন শুক্রবার সকাল ১০টায় পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম চিকনাই উচ্চ বিদ্যালয়ের হল রুমে ‘চিকনাই নদী ও রতনাই নদী দখল-দূষণ ও ডেমড়ার স্লুইসগেট অপসারণের দাবিতে আলোচনা সভা, ‘চিকনাই নদী রক্ষা আন্দোলন ও রতনাই নদী উদ্ধার আন্দোলন অহ্বায়ক কমিটি গঠন, র্যালি ও চিকনাই নদীর তীরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। নদী ও পরিবেশকর্মী এবং ‘চলনবিল রক্ষায় আমরা’-এর সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন রিভারাইন পিপল পাবনার সভাপতি ও বিশিষ্ট নদী গবেষক ড. মো. মনছুর আলম। তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের এই ধরিত্রী বা দেশমাত্রিকা ঠিক থাকলে আমরা ঠিক থাকবো, আর এদের ঠিক রাখতে হলে তার শিরা-উপশিরা অর্থাৎ নদ-নদী ঠিক রাখতে হবে। পাবনার ৩৭টি নদীর মধ্যে বর্তমানে মাত্র ১০টি সচল নদী; অর্ধ-সচল ১৪টি এবং মরা নদী ১৩টি। বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ কষাঘাতে জর্জরিত এই নদীগুলো এখন বাঁচার আকুতি জানাচ্ছে। আপনারা সচেতেন এলাকাবাসী চিকনাই এবং রতনাই নদী রক্ষায় এগিয়ে এসেছেন জেনে আমি অত্যন্ত খুশী হয়েছি। আপনারা এগিয়ে যান, আমরা আপনাদের সার্বিক সহযোগিতায় সর্বদা সাথে আছি। অন্যান্যদের অলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, চিকনাই উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মো. আব্দুল জব্বার, সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুস সালাম, চিকনাই উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বর্তমান সভাপতি, মো. সাদেকুর রহমান, প্রভাষক মো. আশরাফুল ইসলাম, শিক্ষক মো. সাহেব আলী এবং এলাকার জনপ্রতিনিধি মতিউর রহমান মেম্বর। সভায় বক্তাগণ চিকনাই ও রতনাই নদীর বর্তমান অবস্থা, দখল-দূষণ ও নদী পরিবেশ নিয়ে কথা বলেন। নদীতে অবাধে মুরগীর খামারের বর্জ্য ফেলা, নদী তীরে গড়ে উঠা বিভিন্ন বাজারের বর্জ্য, হোটেল-রেঁস্তরার বর্জ্য, নদীর বুক বরাবর বাঁধ দিয়ে পুকুর তৈরি করা, অপরিকল্পিত ব্রিজ-কালভার্ট-স্লুইসগেট নির্মাণ, নদীতে অবাধে ময়লা-আবর্জনা ফেলা, কুচুরিপানা ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। আর এই সমস্যাগুলো সরকার পর্যন্ত পৌঁছাতে হলে আমাদের সংগঠিত হওয়া প্রয়োজন বা সাংগঠনিক প্রয়াস প্রয়োজন। আমরা আজ উপস্থিত সকলে মিলে জনগণকে আরো সম্পৃক্ত করে আজকের এই ছোট্ট আয়োজনকে বিশাল আন্দোলনে পরিণত করতে পারি। আসুন আমরা সবাই মিলে এই দেশকে এই ধরিত্রীকে রক্ষার লক্ষ্যে একটি সংগঠন গড়ে তুলি। অতঃপর উপস্থিত সবাই মিলে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির কর্মকর্তা ও সদস্যগণ হলেন, আহবায়ক- আলহাজ¦ মো. আব্দুল জব্বার, যুগ্ম আহ্বায়ক- ১. মো. সাহেব আলী মাষ্টার, ২. মো. আশরাফুল ইসলাম হারেজ; এবং মো. খলিলুর রহমানকে সদস্য সচিব করে ৩০ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, নদী ও পরিবেশকর্মী, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ প্রায় শতাধিক মানুষ। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন, মো. খলিলুর রহমান। অনুষ্ঠান শেষে সবাই মিলে র্যালি করে চিকনাই নদী তীরে মানববন্ধন করে; এবং এর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
Leave a Reply